ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে কি না, পুনর্বিবেচনা করবে বিএনপি শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ ছাত্রদলের আন্দোলন স্থগিত করেছেন ইশরাক পদত্যাগ করলেন কুয়েটের উপাচার্য অটোপাস দেয়া হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ ৫ সিদ্ধান্ত ঈদের আগেই আসছে নতুন নোট থাকছে না কোনো ব্যক্তির ছবি সাগরে রাষ্ট্রীয় তেল চুরি কুমিল্লা সীমান্তে ১৩ জনকে বিএসএফের পুশইন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা মানবিক করিডরের নামে দেশকে যুদ্ধে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়- দুদু টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি জরুরিÑ পরিবেশ উপদেষ্টা হবিগঞ্জে দুর্ঘটনায় ২ যুবক নিহত, মহাসড়ক অবরোধ ফ্যাসিস্টের দোসর কিবরিয়া হোসনে আরা বহাল তবিয়তে সারাদেশে একই দামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট জুলাই থেকে কার্যকর ডেঙ্গুতে একদিনে ৪৬ জন হাসপাতালে ভর্তি, করোনায় সংক্রমিত ৬ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি খামারিরা দিশেহারা আবারও পিএসএল থেকে ক্রিকেটার নিলো আইপিএল উইন্ডিজের বিপক্ষে ইংলিশ দল থেকে ছিটকে গেলেন আর্চার ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন ক্যাবরেরা

পদত্যাগ করলেন কুয়েটের উপাচার্য

  • আপলোড সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:৩৩:২৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ১২:৩৩:২৭ পূর্বাহ্ন
পদত্যাগ করলেন কুয়েটের উপাচার্য
শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুয়েটের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় আনাসহ ৫ দফা দাবিতে গত ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম ও ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন করে আসছিলেন কুয়েটের শিক্ষক সমিতির নেতারা। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে রেখেছেন তারা। সবশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলার পাদদেশে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করেন শিক্ষকরা। সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে অন্তর্বর্তীকালীন ভাইস চ্যান্সেলরকে অপসারণ করিয়ে যোগ্য ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান চান তারা। এর আগে গত ১ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চুয়েটের পুরাকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ মে তিনি দাফতরিক কাজে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে ক্যাম্পাস ছেড়েছিলেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 
প্রসঙ্গত, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তী উপাচার্য অধ্যাপক মো. হযরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কুয়েটের চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যকে দ্রুত পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন শিক্ষক সমিতির এসব দাবির কথা তুলে ধরেন। এর আগে একই জায়গায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা মনে করছি, এই সংকট সমাধানে উপাচার্য সক্ষম হবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, ছাত্র-শিক্ষক সবার দাবির প্রতি অবজ্ঞা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের দায়িত্বে থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করায় শিক্ষকেরা মনে করেন, বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য কুয়েটের দায়িত্ব পালনে অক্ষম। এমতাবস্থায় শিক্ষকেরা তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করছেন। তিনি বলেন, চলমান সংকট দীর্ঘায়িত না করতে শিক্ষক সমিতি ভাইস চ্যান্সেলরকে সম্মানের সঙ্গে দ্রুত পদত্যাগ করার দাবি জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে সরকারকে কুয়েটবান্ধব, যিনি সমস্যার সমাধান করে বিধিবিধান মেনে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, এমন যোগ্যতার কোনো ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব দাবি প্রকাশ করার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রকৃত ঘটনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা তুলে ধরে সমাধান চান।
গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পূর্বঘোষণা অনুযায়ী প্রশাসনিক ভবনে তৃতীয় দিন এবং গতকাল বৃহস্পতিবার চতুর্থদিনের মতো অবস্থান করেন শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। তিন মাস আগের সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার দাবিতে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের একাংশ শিক্ষকদের কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিল শিক্ষক সমিতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে প্রশাসন কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়।
শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এটিকে প্রহসনমূলক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। পরে একাডেমিক কার্যক্রম আবার চালু করা, একটি নতুন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং আগে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য শৃঙ্খলা কমিটির সভা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা আন্দোলনকারীদের জানান। উপাচার্যের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষক সমিতিকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে শিক্ষক সমিতি আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা শুরুতে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও পরে তা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়। আন্দোলনের মুখে সরকার উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স